h-o-r-o-p-p-a-হ-র-প্পা

Posts Tagged ‘যজ্ঞ

Lothal_Horoppa

ইতিহাসের ঝুল-বারান্দায় বাঙলা ও বাঙালি- ০৩
-রণদীপম বসু

(৩)
নৃতত্ত্বের নিরীখে বাঙলার ভূমিপুত্রেরা বা আদিম অধিবাসীরা ছিল অস্ট্রিক ভাষাভাষী গোষ্ঠীর লোক। নৃতত্ত্বের ভাষায় এদের প্রাক্-দ্রাবিড় বা আদি-অস্ত্রাল (Proto-Australoids) বলা হয়। এই অস্ট্রিকরা এক সময়ে পাঞ্জাব থেকে শুরু করে প্রশান্ত মহাসাগরের সুদূর ইস্টার দ্বীপ অবধি বিস্তৃত ছিল। প্রাচীন বৈদিক সাহিত্যে এদের ‘নিষাদ’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বাঙলার আদিবাসীদের মধ্যে সাঁওতাল, লোধা প্রভৃতি উপজাতিসমূহ এই গোষ্ঠীর লোক। এছাড়া, হিন্দুসমাজের তথাকথিত ‘অন্ত্যজ’ জাতিরাও এই গোষ্ঠীরই বংশধর। এ বুনিয়াদের উপর বাঙলায় প্রথম অনুপ্রবেশ করে স্তরীভূত হয়েছে দ্রাবিড়রা। বৈদিক সাহিত্যে এদের ‘দস্যু’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। আবার দ্রাবিড়দের অনুসরণে আসে আর্য ভাষাভাষী আল্পীয়রা (Alpinoids বা Alpine)। এদের দিনারিক বা আর্মেনয়েডও বলে। দ্রাবিড়দের থেকে আল্পীয়রা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল বলেই বাঙালিজাতি তার নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য (হ্রস্ব কপাল) এদের থেকেই পেয়েছে, যা উত্তর ভারতের (দীর্ঘ কপাল) নর্ডিক গোষ্ঠীভুক্ত বৈদিক আর্য জাতি থেকে বাঙালির পার্থক্য। Read the rest of this entry »

images

| চার্বাক সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা-১৮ : চার্বাক ও বেদ |
রণদীপম বসু

। চার্বাক ও বেদ।

বৈদিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মধ্যে চার্বাক দর্শনের মূল ধারার আবির্ভাবের যে ইঙ্গিত পণ্ডিতেরা দিয়েছেন তার উল্লেখ আগেই করা হয়েছে। এই বিদ্রোহের পটভূমিতে চার্বাক সিদ্ধান্তকে বিচার করতে গেলে বৈদিক চিন্তাধারার সমান্তরালে চার্বাকী মনোভাব মিলিয়ে দেখাটাই প্রাসঙ্গিক হবে। ইতঃপূর্বে আমরা প্রাচীন বৈদিক সাহিত্য ও তার চিন্তাধারার পরিচয় অধ্যায়ান্তরে আলোচনা করেছি। সেখানেই আমরা অবগত হয়েছি যে, বেদের সংখ্যা চার– ঋক্, সাম, যজুস্ ও অথর্ব। অবশ্য বহুক্ষেত্রে বেদ ‘ত্রয়ী’ নামের মাধ্যমে পরিচিত; কারণ, অথর্ব বা চতুর্থ বেদকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে অনেক দেরিতে। প্রত্যেক বেদের আবার তিনটি বিভাগ– মন্ত্র বা সংহিতা, ব্রাহ্মণ এবং উপনিষৎ। সংহিতা, ব্রাহ্মণ এবং উপনিষদে বিভক্ত বেদ এক বিপুল সাহিত্য সম্ভার। বৈদিক সাহিত্য হিসেবে এর পরিচিতি এবং যে যুগের পরিধির মধ্যে এই সাহিত্যের সৃষ্টি, বৈদিক যুগ বলতে সাধারণত তাকেই বোঝায়। Read the rest of this entry »

BLACK_FOREST

| আর্য-সংস্কৃতি ও বৈদিক-যুগ-১৬ : যজ্ঞ |
রণদীপম বসু

৩.৬ : যজ্ঞ

ঋগ্বেদে অবশ্যই যজ্ঞ, যজমান, ঋত্বিক প্রভৃতির প্রচুর উল্লেখ রয়েছে; এমন কি এতে উত্তর-সাহিত্যে– যজুর্বেদ এবং ব্রাহ্মণাদি গ্রন্থে– বর্ণিত কোনো কোনো বিশিষ্ট যজ্ঞের পরিচয়ও পাওয়া যায়। যেমন, অধ্যাপক কীথ্ বলছেন– ঋগ্বেদের প্রথম মণ্ডলের ১৬২ ও ১৬৩ সূক্ত অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই অশ্বমেধ যজ্ঞের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত। মূলত ঋগ্বেদের প্রথম মণ্ডলের উল্লিখিত সূক্তগুলিরই পুনরাবৃত্তি পাওয়া যায় তৈত্তিরীয়-সংহিতা বা কৃষ্ণযজুর্বেদের চতুর্থ কাণ্ডের ষষ্ঠ প্রপাঠকের মন্ত্রগুলিতে, যেগুলি অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠানে পঠিত হয়। কিন্তু উত্তর-সাহিত্যে অর্থাৎ যজুর্বেদ ও ব্রাহ্মণাদি গ্রন্থে বৈদিক যজ্ঞকে যে-জটিল ও পল্লবিতরূপে দেখা যায় ঋগ্বেদে নিশ্চয়ই তার পরিচয় নেই। এর থেকে অনুমান করা হয় যে, ঋগ্বেদের যুগে যজ্ঞ পরবর্তীকালের মতো ছিলো না। তার মানে, বিদ্বান গবেষকদের দৃষ্টিতে, যজ্ঞের আদি-রূপ ও উত্তর-রূপ এক নয়। অর্থাৎ, পরবর্তী কালে যজ্ঞ বলতে আমরা যা বুঝতে অভ্যস্ত হয়েছি আদিতে যজ্ঞ বলতে ঠিক তা বোঝাতো না। Read the rest of this entry »

1908473_744382928977158_9020559613900978247_n

| আর্য-সংস্কৃতি ও বৈদিক-যুগ-০৮ : ঋগ্বেদের সমাজ |
রণদীপম বসু

৩.১ : ঋগ্বেদের সমাজ

যে-কোনো সমাজ-সংগঠনের পরিপ্রেক্ষিতেই সেই সমাজের চিন্তাধারা প্রতিফলিত হয়। নৃতাত্ত্বিকদের মতে, সভ্যতার বিবর্তন ধারায় সব দেশে সব মানুষের উন্নতি সমান তালে ঘটেনি। আধুনিক সভ্য মানুষের পূর্বপুরুষেরা বহু যুগ আগে যে-অবস্থায় বাস করতো কোনো কোনো পিছিয়ে পড়া মানবগোষ্ঠী সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত সেই অবস্থায় আটকে থেকেছে। আর এই কারণেই আধুনিক পৃথিবীর ওই পিছিয়ে-পড়ে থাকা মানুষদের পরীক্ষা করে নৃতত্ত্ববিদরা প্রাগৈতিহাসিক অতীতের কথা অন্তত আংশিকভাবে অনুমান করে থাকেন। সে-বিচারে নৃ-তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে যে-কোনো আদিম পর্যায়ের সমাজ-সংগঠনের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এক স্বতঃস্ফূর্ত গোষ্ঠীগত ঐক্য। এ-ঐক্য এমনই গভীর যে তাদের মধ্যে ব্যক্তি-স্বার্থ ও ব্যক্তি-বোধেরও ঐকান্তিক অভাব পরিলক্ষিত হয়। গোষ্ঠীর সামগ্রিক স্বার্থই প্রত্যেকের নিজস্ব স্বার্থ, প্রত্যেকের সম্পদই গোষ্ঠির সামগ্রিক সম্পদ। প্রাচীন বৈদিক মানুষদের ক্ষেত্রে এরকম কোনো পর্যায় অনুমান করতে হলে এ-ক্ষেত্রেও অনুমানের অবকাশ থাকে যে, বৈদিক সমাজ-বিবর্তনের কোনো-এক পর্যায়েও এ-জাতীয় গোষ্ঠী-চেতনা ও সাম্য-ব্যবস্থার পরিচয় থাকা স্বাভাবিক। তার মানে অবশ্য এই নয় যে বৈদিক সাহিত্য রচনার সমগ্র যুগ ধরে আগাগোড়াই ওই আদিম সাম্য-সমাজ প্রতিষ্ঠিত ছিলো। উপনিষদের সমাজ, ব্রাহ্মণের সমাজ, এমনকি ঋগ্বেদে সংকলিত অপেক্ষাকৃত অর্বাচীন অংশে প্রতিফলিত সমাজও নিশ্চয়ই আদিম সাম্য-সমাজ নয়। বস্তুত– Read the rest of this entry »

Chanakya-quotes

| আর্য-সংস্কৃতি ও বৈদিক-যুগ-০৩ : বৈদিক সাহিত্য- ব্রাহ্মণ |
রণদীপম বসু

২.২ : ব্রাহ্মণ

মীমাংসা-সূত্রকার মহর্ষি জৈমিনি বেদকে মন্ত্র ও ব্রাহ্মণ– এই দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। মন্ত্র হচ্ছে সর্বপ্রাচীন ভাগ। মন্ত্রের ব্যাখ্যা করা হলো ব্রাহ্মণের কর্ম এবং যজ্ঞের বিধিবিধানে তার প্রয়োগ করা। মূলত যাগ-যজ্ঞ সম্বন্ধে নানা প্রকার আচার-অনুষ্ঠান ও বিধি-নিষেধমূলক নির্দেশিত গদ্যে রচিত সাহিত্যই ‘ব্রাহ্মণ’। কোন্ যজ্ঞ করলে কী ফল পাওয়া যাবে, কোন্ যজ্ঞে কোন্ পুরোহিতকে কত দক্ষিণা দিতে হবে, কোন্ যজ্ঞকর্মের খুঁটিনাটি প্রক্রিয়া ঠিক কেমনভাবে সাধন করতে হবে, কোন্ যজ্ঞের ঠিক কোথায় কীভাবে কোন্ মন্ত্র প্রয়োগ করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদিই ‘ব্রাহ্মণ’ নামে পরিচিত গ্রন্থগুলির প্রধানতম আলোচ্য-বিষয়। অনেক সময় এতে যজ্ঞকর্ম ছাড়াও খুঁটিনাটি অনুষ্ঠানেরও গূঢ় আধ্যাত্মিক তাৎপর্য উদ্ভাবন করবার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। Read the rest of this entry »

427267_506188162728739_1008116371_n.

| মীমাংসা দর্শন-১৭ : বৈদিক দেবতা প্রসঙ্গে মীমাংসা-মত |
-রণদীপম বসু

৪.৪ : বৈদিক দেবতা প্রসঙ্গে মীমাংসা-মত


বেদে প্রচুর সংখ্যক দেব-দেবীর প্রতি স্তুতিপূর্ণ মন্ত্র-পূজাদির উপস্থিতি থেকে স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা যেতে পারে যে, মীমাংসকরা ঐকান্তিক অর্থে বেদপন্থী বলেই সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান কোনো ঈশ্বর অস্বীকার করলেও তাঁরা অন্তত বৈদিক দেবতাদের কর্তৃত্বে বিশ্বাসী হবেন, এবং এই অর্থে তাদের মতবাদ বহু-দেববাদী হওয়াই সম্ভব। কিন্তু, আপাত-বিস্ময়কর মনে হলেও এটাই ঠিক যে, মীমাংসকরা বৈদিক দেবতাদের কর্তৃত্ব- এমনকি তাঁদের সত্তাও- সম্পূর্ণভাবেই অস্বীকার করেছেন। মীমাংসাসূত্রে মহর্ষি জৈমিনি বলেন-  

‘অপি বা শব্দপূর্ব্বত্বাদ্ যজ্ঞকর্ম্ম প্রধানং স্যাদ্ গুণত্বে দেবতাশ্রুতিঃ।’- (শাবরভাষ্য-মীমাংসাসূত্র-৯/১/৯)
অর্থাৎ : একপদ শ্রুতি দ্বারা বোধিত যাগের কর্ম, অর্থাৎ যাগজন্য যে অপূর্ব, তা-ই প্রধান। সেই অপূর্বের অঙ্গরূপে দেবতাবিষয়ক শাস্ত্রবচন। (তর্জমা- সুখময় ভট্টাচার্য্য)


Read the rest of this entry »

380712_496249430389279_962211301_n.

| মীমাংসা দর্শন-১৫ : অপূর্ব-বাদ |
-রণদীপম বসু

৪.২ : অপূর্ববাদ 


মীমাংসার একটি মৌলিক সিদ্ধান্ত হলো- ‘আম্লায়স্য ক্রিয়ার্থত্বম্’- অর্থাৎ, বেদের তাৎপর্য হলো ক্রিয়া।
এখানে ক্রিয়া বলতে যাজ্ঞিক ক্রিয়াকলাপ বোঝাচ্ছে। কিন্তু কেন যজ্ঞকর্ম করতে হবে ? যেহেতু বেদে যাগযজ্ঞ অনুষ্ঠানের নির্দেশ রয়েছে তাই যাগযজ্ঞ অনুষ্ঠান বেদ নির্দেশিত বলে তা করতে হবে। মীমাংসকরা বৈদিক যাগযজ্ঞ অনুষ্ঠানকে অনুমোদন করলেও এই সব যাগযজ্ঞ দেবতাদের তুষ্ট করার জন্য করতে হবে তা সমর্থন করেন না। তবে কোনো কর্তব্য সম্পাদন করলে কর্তব্য সম্পাদনে যে ফল লাভ হয় এ কথা মীমাংসকরা বিশ্বাস করেন। তাই লৌকিক শুভকর্ম এবং বেদ-বিহিত কর্মের অনুষ্ঠানের দ্বারা মানুষ ঐহিক ও পারলৌকিক শুভফল লাভ করতে পারে। এই ফল কোন ঈশ্বর প্রদান করে না, কেননা মীমাংসা-মতে কর্তব্য কোনো বেদ নিহিত ঈশ্বরের আদেশ নয়। মীমাংসকরা ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন না এবং তাঁরা ‘ঈশ্বর’ নামের কোনো অতি-প্রাকৃত সত্তার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না। তাঁদের মতে কর্তব্য-কর্মের ফললাভ হয় কর্ম নিয়ম অনুসারে। কিন্তু এই কর্ম নিয়ম কী ? Read the rest of this entry »


রণদীপম বসু


‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল।...’
.
.
.
(C) Ranadipam Basu

Blog Stats

  • 1,231,854 hits

Enter your email address to subscribe to this blog and receive notifications of new posts by email.

Join 188 other subscribers
Follow h-o-r-o-p-p-a-হ-র-প্পা on WordPress.com

কৃতকর্ম

সিঁড়িঘর

দিনপঞ্জি

এপ্রিল 2024
রবি সোম বুধ বৃহ. শু. শনি
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

Bangladesh Genocide

1971 Bangladesh Genocide Archive

War Crimes Strategy Forum

লাইভ ট্রাফিক

ক’জন দেখছেন ?

হরপ্পা কাউন্টার

Add to Technorati Favorites

গুগল-সূচক

Protected by Copyscape Web Plagiarism Check

Flickr Photos