| একটি অসমাপ্ত সমাবেশ |
Posted 15/08/2009
on:একটি অসমাপ্ত সমাবেশ
-রণদীপম বসু
.
এখানে যে ভাঙাচোরা মানুষগুলো একত্রিত হয়েছেন,
প্রত্যেকেই অসম্পূর্ণ-
এক অদ্ভুত জৈবিক মোহে তাড়িত সবাই;
অথচ ভুলেও উচ্চারণ করবেন না সে কথা।
নিজেকে আবৃত রেখে অন্যের নগ্নতা দেখায়
কতোটা আগ্রহী হলে
কামার্ত ষাঁড়ের জিহ্বার মতো
মানুষের চোখে চোখে নেচে ওঠে আঠালো অক্ষরের ক্ষত-
নিরন্তর চোখাচোখি করে কেউ কেউ জেনে যাবেন ঠিকই।
এবং এ কথাগুলো জেনে গেলে
হয়তো অপাঙ্গে কেউ নিজকেই খুঁজবেন আবার,
দেখে নিতে- পোশাকের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা
কতোটা অটুট এখনো।
সংজ্ঞাহীন তুলনামূলক প্রাণীর কোন অবয়ব থাকে না;
মানুষের ভেতরেও তাই মানুষের ছবি নেই-
একগাদা প্রাণী আর অপ্রাণীর ব্যাখ্যাহীন স্বভাব নিয়ে
নিরন্তর ছুটাছুটি শুধু।
এখানে এসেছেন যারা-
সবাই পকেটে ভরে এনেছেন কিছু না কিছু;
জোনাকির গুঞ্জন নিয়ে এসেছেন কেউ-
নীরবতার নতুন কোন অর্থ খোঁজবেন এরা;
কারো বা পকেটে আছে ভ্রুণ হত্যার বৈধ প্রত্যয়ন।
এইমাত্র খুন হলো যার অবারিত শৈশব
কিংবা যে কিনা অজান্তেই ফিরে গেছে
কোন এক ভুল কৈশোরে
তারুণ্যের হৈ চৈ চোখে এসে গেছে সেও
সঙ্গী শরীরীর খোঁজে।
এমনো আছেন কেউ- নিজস্ব পকেট ভুলে
নির্দ্বিধায় ঢুঁ দেবেন অন্য কারো পকেটে পকেটে;
এবং আমার মতো নির্বোধ এসেছেন যারা-
এখনো সত্যিই পকেটহীন,
সদ্যজাত নগ্নতার ভাবার্থ খুঁজে খুঁজেই
কাটাবেন আরো কিছুকাল।
আর যারা রয়েছেন পকেটের অজ্ঞাত খবর নিয়ে-
হতে পারে কোন এক মাহেন্দ্র-মুহূর্তে
ঝাঁপি খুলে চমকে দেবেন!
তবে সবারই লক্ষ্য আজ
মাননীয় প্রধান অতিথির সুদৃশ্য পকেটের ভাজে-
যেখানে এক অভূতপূর্ব দক্ষতায়
মানুষের বিবিক্ত অনুবাদ হবে!
যদি একান্তই এসে পড়েন তিনি-
সময়ের দুষ্ট-ক্ষেপনে ঘৃণা করতে করতে
উঠে আসবেন মঞ্চে
এবং একযোগে অবাক হয়ে দেখবে সবাই
মাননীয় অতিথির বুকে- কোথায় সে পকেট?
ওখানে বিশাল ক্ষত!
কারণ, এরই মধ্যে সর্বত্র গুঞ্জন হচ্ছে-
তিনি নাকি এখন এক তুমুল ছিনতাইয়ের কবলে!
অতএব আজকের এ সমাবেশ
অসমাপ্ত রইলেও
যারা এসেছেন আজ- অন্তত জেনে যাবেন এটুকুই-
মানুষের পরিচয় একমাত্র মানুষই ছিনতাই করে।
(১৫/০১/২০০৮)
এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান