- In: তন্ত্র-সাধনা | বই-পত্র | শক্তি থেকে ভক্তি
- 1 Comment
গ্রন্থ : বাঙালির লৌকিক ভাবদর্শন-২ : তন্ত্র ও গুহ্যসাধনা
(কভার-ফ্ল্যাপের বয়ান)
…
বাঙালি একটি ভাষাভিত্তিক ও গোষ্ঠীভিত্তিক জাতি। জাতির বহমান সংস্কৃতি থাকে। বাঙালির ক্ষেত্রে এ ধারাটি অনেক সমৃদ্ধ। কোনো নির্দিষ্ট ভূখ- একটি রাষ্ট্রের অবিভাজ্য উপাদান হতে পারে, কিন্তু সঙ্গত কারণেই তা জাতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না। ধর্ম কোন জাতির জাতিসত্তা নির্ধারণের মৌল উপাদান নয়। কেননা, ধর্ম সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান হতে পারে, কিন্তু জাতিসত্তার নয়। তবে একটি জাতির সাংস্কৃতিক আচার, চিন্তার কাঠামো বা লৌকিক ভাবজগত তৈরির ক্ষেত্রে তার সংস্কৃতির অন্তর্গত বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনা ও উপাচারগুলোর প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজ গ্রন্থে বাঙালির লৌকিক ভাবজগত গঠনের বিভিন্ন উপাদান খোঁজার পাশাপাশি তার সাধন-বৈশিষ্ট্যেরও সন্ধান করা হয়েছে।
‘বাঙালির লৌকিক ভাবদর্শন’ সিরিজ গ্রন্থের বর্তমান খণ্ডের বিষয়বস্তু তন্ত্র ও গুহ্যসাধনা এবং তার প্রভাব ও বিস্তার সম্পর্কিত। ক্রিয়ামূলক শক্তি-সাধনা হিসেবে তন্ত্র সম্পূর্ণ একটি সাধনশাস্ত্র, যা বাঙালির প্রায় সকল ধর্মসাধনা ও লোকাচারে গভীরভাবে মিশে আছে। তান্ত্রিক ক্রিয়াকাণ্ডের ফল প্রত্যক্ষসিদ্ধ বলে বিশ্বাস করে বলা হয়–চিকিৎসাশাস্ত্র, জ্যোতিষ এবং তন্ত্রের বচন প্রতি পদে প্রত্যক্ষ সত্য। আমাদের সাধারণ লৌকিক জনগোষ্ঠীতেও এই বিশ্বাস কতোটা প্রবল তার নমুনাও অগোচর নয়। ঝাড়-ফুক, তাগা-তাবিজ, বান-বদ্যি, জ্যোতিষ-বিচারের সাথে প্রাত্যহিক জীবন-যাপনের অংশ হয়ে থাকা এই বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রবল বিশ্বাস-নির্ভরতা থেকেই তা প্রত্যক্ষ করা যায়। এখানে যতটা না ধর্ম, তার চেয়ে অধিক সত্য হলো লোকায়ত সাংস্কৃতির প্রবহমানতা। এ গ্রন্থের বিস্তৃত পরিসরে তারই উৎস ও পরম্পরা খোঁজার পাশাপাশি তন্ত্রশাস্ত্রের একটি আকর্ষণীয় রূপরেখা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আগ্রহী পাঠক পরিশ্রমলব্ধ এ গ্রন্থটির যথাযথ গুরুত্ব উপলব্ধি করবেন বলে আমরা আশা করি।
গ্রন্থতথ্য
…
গ্রন্থের নাম : বাঙালির লৌকিক ভাবদর্শন-২ : তন্ত্র ও গুহ্যসাধনা
লেখক : রণদীপম বসু
প্রকাশ : রোদেলা সংস্করণ ফেব্রুয়ারি-২০২৪
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৬৪০
মুদ্রিত মূল্য : ৮০০/- টাকা
প্রকাশক : রিয়াজ খান (ফোন: +৮৮ ০১৭১১৭৮৯১২৫)
রুমি মার্কেট (২য় তলা) ৬৮-৬৯, প্যারিদাস রোড (বাংলাবাজার)
ঢাকা-১১০০।
প্রচছদ : মোবারক হোসেন লিটন
ISBN : 978 984 98235 6 8
গ্রন্থ : বাঙালির লৌকিক ভাবদর্শন-১ : মাতৃকাশক্তি ও জাদুবিশ্বাস
(কভার-ফ্ল্যাপের বয়ান)
বাঙালি একটি ভাষাভিত্তিক ও গোষ্ঠীভিত্তিক জাতি। জাতির বহমান সংস্কৃতি থাকে। বাঙালির ক্ষেত্রে এ ধারাটি অনেক সমৃদ্ধ। কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ড একটি রাষ্ট্রের অবিভাজ্য উপাদান হতে পারে, কিন্তু সঙ্গত কারণেই তা জাতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না। আর ধর্ম কোন জাতির জাতিসত্তা নির্ধারণের মৌল উপাদান নয়। কেননা, ধর্ম সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান হতে পারে, কিন্তু জাতিসত্তার নয়। তবে একটি জাতির সাংস্কৃতিক আচার, চিন্তার কাঠামো বা লৌকিক ভাবজগত তৈরির ক্ষেত্রে তার সংস্কৃতির অন্তর্গত বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনা ও উপাচারগুলোর প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজ গ্রন্থে বাঙালির লৌকিক ভাবদর্শন গঠনের বিভিন্ন উপাদানগুলো খোঁজার পাশাপাশি বাঙালি জাতির প্রাগৈতিহাসিক পটভূমিরও সন্ধান করা হয়েছে।
‘বাঙালির লৌকিক ভাবদর্শন’ সিরিজ গ্রন্থের বর্তমান খণ্ডের বিষয়বস্তু মাতৃকাশক্তি ও প্রজননমূলক জাদুবিশ্বাসের প্রভাব ও তার বিস্তার সম্পর্কিত, যাকে পণ্ডিতজনেরা ভিন্ন নামে শক্তি-সাধনা হিসেবেও চিহ্নিত করে থাকেন। আক্ষরিক অর্থে আসলে শক্তিপূজা বলে কিছু নেই। বস্তুত শক্তির উৎস হিসেবে কিছু প্রতীকের উপস্থাপন এবং সেই প্রতীককে বা প্রতীকের মাধ্যমে পূজার প্রচলনই হয়তো শক্তিপূজার প্রাচীনতম নিদর্শন। কোনো পাথর, পশুপক্ষী, গাছপালা বা বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্নকে মাধ্যম করে উপাসনা, মানত ইত্যাদি বাঙালির লৌকিক জীবনে প্রচলিত অতি সাধারণ উপাচার হিসেবে বাঙালির ভাবজগতকে এখনও পরিব্যাপ্ত করে আছে। এখানে যতটা না ধর্ম, তার চেয়ে অধিক সত্য হলো লোকায়ত সাংস্কৃতির প্রবহমানতা। এ গ্রন্থে বিস্তৃত পরিসরে তারই উৎস ও পরম্পরা খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। আগ্রহী পাঠক গ্রন্থটির যথাযথ গুরুত্ব উপলব্ধি করবেন বলে আমরা আশা করি।
গ্রন্থতথ্য
গ্রন্থের নাম : বাঙালির লৌকিক ভাবদর্শন-১ : মাতৃকাশক্তি ও জাদুবিশ্বাস
লেখক : রণদীপম বসু
প্রকাশ : রোদেলা সংস্করণ ফেব্রুয়ারি-২০২৩
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৪৪৮
মুদ্রিত মূল্য : ৬০০/- টাকা
প্রকাশক : রিয়াজ খান (ফোন: +৮৮ ০১৭১১৭৮৯১২৫)
রুমি মার্কেট (২য় তলা) ৬৮-৬৯, প্যারিদাস রোড (বাংলাবাজার)
ঢাকা-১১০০।
প্রচছদ : মোবারক হোসেন লিটন
ISBN : 978 984 96506 9 0
গ্রন্থ : ঋৎবচন
Posted 21/04/2024
on:- In: বই-পত্র | মু্ক্তচিন্তা
- 1 Comment
গ্রন্থ : ঋৎবচন
(কভার-ফ্ল্যাপের বয়ান)
সব প্রাণীরই নিজস্ব ভাষা থাকে। মানুষেরও আছে। তবে অন্য প্রাণীরা যা পারে না, মানুষ কথা বলতে পারে। মন ও মননের এক বিস্ময়কর জগত ধারণ করে মানুষ পরিণত হতে পারে এক অসাধারণ সত্তায়। এটা মানুষেরই কৃতিত্ব। এরকম বহুমাত্রিক অর্জনের কৃতিত্ব মানুষের ঝোলায় রয়েছে বলেই মানুষের উচ্চতা আর গভীরতা যেমন অসীম, সীমাবদ্ধতাও অনেক। জীবনের বহমানতায় এই গভীর উচ্চতা আর সীমাবদ্ধতার স্রোতেই মানুষ ভাসে, হাসে, কাঁদে, অন্যকেও ভাসায়, হাসায়, কাঁদায়। তবে অর্জনগুলো উজ্জ্বল বলে সবার নজরে আসে তা। কিন্তু সীমাবদ্ধতার গোপন ছায়াগুলো খুব একটা চোখে পড়ে না হয়তো। তবু বলার অপেক্ষা রাখে না, মানুষের এই সীমাহীনতা ও সীমাবদ্ধতার উপলব্ধিগত সারাৎসার মনে ও মননে ধারণ করে প্রতিটি ব্যক্তি-মানুষই জানতে বা অজান্তে চেতনে বা অবচেতনে সবসময়ে না হলেও কখনও কখনও কোনো বিশেষ মুহূর্তে হয়তো কিছুকালের জন্যে হলেও এমন এক দার্শনিকের স্তরে উন্নীত হন, যখন তাঁর কাছে চারপাশের দৃশ্য ও ঘটনাগুলো বহুমাত্রিক অর্থ ও উপলব্ধি নিয়ে উপস্থিত হয়।
প্রতিটি মানুষের মধ্যে এই যে একেকটি দার্শনিক সত্তা লুকিয়ে থাকে, এই দার্শনিক সত্তাই আমাদের ভেতর-মানুষ। যা অধিকাংশ সময়ই মানব-মনের গভীর-গোপন কোন কন্দরে চোখ বুঁজে ঝিমোতেই পছন্দ করে। কিন্তু তার বিস্ময়কর সংবেদনশীলতা তাকে ঘুমোতে দেয় না। প্রতিদিনের যাপিত জীবনে ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির, সমাজের, প্রকৃতির, পরিবেশের সম্পর্ক-সংঘাত-টানাপোড়েনের মধ্যে তার গভীরায়তনিক অদৃশ্য চোখ দুটো টুক করে বের হয়ে এসে সবকিছুরই একটা নিজস্ব পরিমাপ করে আবার ফিরে যায় আগের জায়গায়। ওই সময়ের যাবতীয় সম্পর্ক-সূত্রের তাৎক্ষণিক একটা নির্ধারকও সে নির্ণয় করে ফেলে তার নিজস্ব ভঙ্গিতে। এটা ঘটে ওই ব্যক্তিসত্তার সচেতন কিংবা অবচেতনভাবেই। অনেক ক্ষেত্রে আবার কেউ কখনও জানতেও পারে না তার দার্শনিক সত্তার উপস্থিতির বিষয়টি। আবার কেউ হয়তো নিজের গভীরে ডুব দিয়ে টের পেয়ে যান তাঁর ভেতরের এই অন্য মানুষটির এক দুর্বোধ্য অস্তিত্ব। কেউ আবার সেই ভেতর-মানুষটির সাথেই পেতে বসেন আরেকটি সংসার। অন্য এক উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতায় সিঞ্চিত হয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করে নেন এক অতিপ্রাকৃত চেতনায়। এর কোন ব্যাখ্যা নেই, থেকে যায় কিছু অনুভব, কিছু উপলব্ধি। তবে এই উপলব্ধি কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। প্রচলিত বিশ্বাস, বাস্তবতা বা সত্যের সাথে এই চৈতনিক উপলব্ধির ফলাফল মিলতেই হবে এমন কথা নেই। কোন কোন ক্ষেত্রে তা হতে পারে সাংঘর্ষিকও। কিন্তু তবু তা ব্যক্তিসত্তার একান্ত নিজস্ব ভাবনাই।
এই ভাবনাগুলোকে ছোট ছোট স্বয়ংসম্পূর্ণ বচনাকারে গ্রথিত করার প্রয়াস হিসেবে ‘ঋৎবচন’কে সেরকম উপলব্ধিজাত কিছু ভাবা যেতেই পারে, অথবা অন্য কিছু ভাবার স্বাধীনতাও রুদ্ধ করে না তা। এ প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ’চারুকথা’ শিরোনামে ধারাবাহিক পোস্টগুলোকেও এর অন্যতম উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়। তবে বচনগুলোকে যে-নামেই ডাকা হোক না কেন, এর মধ্যে অতিপ্রাকৃত কোন চেতনাগত বিষয় বা অস্তিত্ব যে নেই এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। যা আছে তা নিখাদ বস্তুগত অনুভব, উপলব্ধি ও মনস্তাত্ত্বিক কিছু পর্যবেক্ষণের নির্যাস মাত্র। যেহেতু ব্যক্তিভেদে নিজস্ব জ্ঞান, চিন্তার কাঠামো ও উপলব্ধি ভিন্ন, তাই এ বইয়ে বর্তমান লেখকসৃষ্ট ঋৎবচনগুলোর বক্তব্য ও ভাবনার সাথে পাঠকের নিজস্ব চিন্তাসূত্রের অভিন্ন মিল খোঁজা অমূলক হবে। কিংবা প্রচলিত ধারণার উপর তা আরোপ করাও হবে অসংগত। বরং কৌতুহলি পাঠকমনে নতুন নতুন চিন্তা ও প্রশ্ন জাগানোই বইটির উদ্দেশ্য।
উল্লেখ্য, ইতঃপূর্বে জীবন, জগত ও মানুষ সম্পর্কিত এসব বচনাকার খণ্ড খণ্ড ভাবনাকে গ্রন্থিত করে শুদ্ধস্বর প্রকাশন থেকে তিনশ’ বচনের সমন্বয়ে ‘উৎবচন’ নামে একটি বই প্রকাশ করা হয়েছিল। বইটির কোন প্রিন্ট কপি এখন আর বাজারে নেই এবং সেটি আর পূর্বরূপে পুনঃপ্রকাশও সম্ভব নয় বিধায় আগ্রহী পাঠকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সে বইয়ের বচনগুলো থেকে নির্বাচিত কিছু বচন সম্পাদন ও পরিমার্জন-পূর্বক নতুন রচিত বচনগুলোর সাথে অন্তর্ভুক্ত করে পাঁচশ’ বচনের সমন্বয়ে বর্তমান ‘ঋৎবচন’ বইটি গ্রন্থিত হলো। আর এ কাজে যাঁর সার্বক্ষণিক প্রেরণা, উৎসাহ ও স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার কথা উল্লেখ না করলে আমার অকৃতজ্ঞতার বোঝা বাড়কে বৈ লাঘব হবে না, তিনি আমার মন ও মননের সকল সময়ের সাথী ও জীবনসঙ্গী রূপাবলী দে। তাঁর কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই তাঁদের সবাইকে যাঁদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বইটি তার নিজস্ব অবয়ব নিয়ে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছে। মন ও মনন চর্চায় কৌতুহলী পাঠকের ভাবনাকে যদি এ বই একটুও নাড়া দিতে পারে তবেই তার সার্থকতা। আশা করি এর অন্যথা হবে না। পরিশেষে সবার জন্য নিরন্তর শুভকামনা।
গ্রন্থতথ্য
গ্রন্থের নাম : ঋৎবচন
লেখক : রণদীপম বসু
প্রকাশ : রোদেলা সংস্করণ ফেব্রুয়ারি-২০২১
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১২৮
মুদ্রিত মূল্য : ২০০/- টাকা
প্রকাশক : রিয়াজ খান (ফোন: +৮৮ ০১৭১১৭৮৯১২৫)
রুমি মার্কেট (২য় তলা) ৬৮-৬৯, প্যারিদাস রোড (বাংলাবাজার)
ঢাকা-১১০০।
প্রচছদ : আবুল ফাতাহ
ISBN : 978 984 94481 9 8
ইতিহাসের ঝুল-বারান্দায় বাঙলা ও বাঙালি- ১৩
-রণদীপম বসু
…
(১৩)
বাঙলায় পাঠান-আমলের সর্বশেষ শাসনকর্তা ছিলেন আবুল মুজফ্ফর দায়ুদ খাঁ শাহ (১৫৭৩-৭৬ খ্রি)। এই দায়ুদ খাঁ’র মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাঙলায় পাঠান রাজত্বের অবসান ঘটে এবং বাঙলা মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। পাঠানদের রাজত্বকাল সম্পর্কে পণ্ডিত রজনীকান্ত চক্রবর্তীর মন্তব্য হলো–
‘পাঠান রাজত্বকালকে তিন ভাগে বিভক্ত করা যাইতে পারে, ১ম ভাগ– ১১১৯ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৩৩৯ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত যাঁহারা রাজত্ব করেন, তাঁহারা দিল্লীর সম্রাটের অধীনতা স্বীকার করিতেন। কেহ কেহ স্বাধীনতা অবলম্বনের চেষ্টা করিতেন, কিন্তু তাহাতে কৃতকার্য্য হইতে পারিতেন না। ২য় ভাগ– ১৩৩৯ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৫৩৯ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত গৌড়াধিপগণ সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিলেন, দিল্লীশ্বরগণ সম্পূর্ণরূপে তাহাদের স্বাধীনতা স্বীকার করিতেন। ৩য় ভাগ– গৌড়েশ্বরদের মধ্যে কেহ কেহ দিল্লীর অধীনতা স্বীকার করিতেন, কেহ দিল্লীর সম্রাটকে উপহারাদি দিয়া সন্তুষ্ট করিতেন। সাঁইত্রিশ বৎসর পর্য্যন্ত এই ভাবে চলে, দায়ুদ খাঁ সম্রাটের সঙ্গে বিবাদ করিতে গিয়া ধনে প্রাণে মারা যান।’– (গৌড়ের ইতিহাস, পৃষ্ঠা-২৬৭) Read the rest of this entry »
ইতিহাসের ঝুল-বারান্দায় বাঙলা ও বাঙালি- ১২
-রণদীপম বসু
…
(১২)
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ (১৪৯৩-১৫১৯ খ্রি) বঙ্গের ইতিহাসে বিখ্যাত ব্যক্তি। কেননা, তাঁর রাজত্বকালেই চৈতন্যদেব বঙ্গদেশ প্রেমের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন বাদশা মুজাফ্ফর শাহ-এর উজীর। মুজাফ্ফর শাহ নিহত হলে হোসেন শাহ সর্বসম্মতিক্রমে সিংহাসনে আরোহণ করেন। মুজাফ্ফর শাহ কর্কশ স্বভাব, ধনলোভী, রক্তপিপাসু নিষ্ঠুর রাজা ছিলেন। হোসেন শাহ তাঁকে প্রজাগণের প্রতি সদ্ব্যবহার করতে পরামর্শ দিতেন বলে জানা যায়, এজন্য হোসেন শাহ আগে থেকেই সবার প্রীতিভাজন ছিলেন। Read the rest of this entry »
ইতিহাসের ঝুল-বারান্দায় বাঙলা ও বাঙালি- ১১
-রণদীপম বসু
…
(১১)
১২০৫ সালে নিজেরই লোক আলিমর্দান খলজির বিশ্বাসঘাতকতায় বখতিয়ার খলজি নিহত হন। এর পরেই শুরু হয়ে যায় সিংহাসনের জন্যে ষড়যন্ত্র, গুপ্তহত্যা, রক্তাক্ত যুদ্ধ ও হত্যাকাণ্ড। দেখা যাচ্ছে–
‘পাঠানেরা গৌড়-রাজ্য অধিকার করিয়া আপনাদের মধ্যে ভাগ করিয়া লয়, অত্যল্প স্থান রাজার খাসে থাকে। সেনানীরা স্ব স্ব অধিকৃত স্থানে দুর্গ নির্ম্মাণ করিয়া, প্রায় স্বাধীনভাবে বাস করিতে থাকে। যুদ্ধের সময়, ইহারা সেনাদ্বারা গৌড়-রাজের সহায়তা করিত; রাজ-নির্ব্বাচন প্রভৃতি বড় বড় কার্য্যে রাজধানীতে সমবেত হইত। ভূ-সম্পত্তির লোভে মধ্য-আসিয়া হইতে মধ্যে মধ্যে সাহসী বীরপুরুষগণ হিন্দুস্থানে আসিতেছিল। গৌড়ের রাজা হইতে আরম্ভ করিয়া এই সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূম্যধিকারিগণ পর্য্যন্ত প্রজাগণকে নিপীড়িত করিত। প্রজাদের জন্য না হউক, সেনাগণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য, মধ্যে মধ্যে প্রশস্ত বর্ত্ম নির্ম্মিত হইত। ১৩৩০ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত দক্ষিণ-বেহার, কখন কখন শারণ পর্য্যন্ত উত্তরবেহার গৌড়র পাঠান রাজাদের অধীন থাকিত। গৌড়ব্যতীত, সুবর্ণগ্রাম ও সপ্তগ্রাম বাঙ্গালার দুইটি প্রধান নগর ছিল; দেবকোট ভগ্নাবস্থায় পতিত হইতেছিল। পাঠানেরা নিতান্ত গোঁড়া মুসলমান ছিল। অধীন প্রজাদের আচার ব্যবহারের প্রতি উহাদের কিছুমাত্র সহানুভূতি ছিল না।’– (রজনীকান্ত চক্রবর্তী, গৌড়ের ইতিহাস, পৃষ্ঠা-১৯৩) Read the rest of this entry »
ইতিহাসের ঝুল-বারান্দায় বাঙলা ও বাঙালি- ১০
-রণদীপম বসু
…
(১০)
১২০১ সালে বখতিয়ার খলজি বিহার ও বাঙলাদেশ বিজয়ের জন্য অভিযান শুরু করে রাজা লক্ষ্মণসেনকে পরাজিত করে বাঙলায় মুসলিম শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি প্রথমে (লক্ষ্মণসেনকে বিতাড়িত করে) নবদ্বীপ, তারপরে নদীয়া ও বাঙলার প্রাচীন ও ঐতিহাসিক রাজধানী গৌড় দখল করার অল্পদিন পরেই বরেন্দ্রভূমি জয় করে দেবকোটে রাজধানী স্থাপন করেন। গবেষকদের মতে, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি ছিলেন একজন ভাগ্যান্বেষী উচ্চাকাঙ্খী তুর্কী যোদ্ধা। গজনীর সুলতান শিহাবউদ্দিন মুহাম্মদ ঘোরী দিল্লী ও আজমীর অধিকার করে কুতবুদ্দিন আইবেককে দিল্লীতে নিজের প্রতিনিধি রেখে গজনীতে ফিরে গেলে, বখতিয়ার খলজি কুতবুদ্দিনের অন্যতম সেনাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। যতদূর জানা যায়,– Read the rest of this entry »
সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ